কমোডাস ও সম্মাননা অনুষ্ঠান
–কেকা আইচ
আকাদেমি অফ- ফাইন আর্টসে শোভাবাজার প্রতিবিম্ব-র নবতম প্রযোজনা বিশিষ্ট নাট্যকার সুমন্ত্র চট্টোপাধ্যায়-এর ‘কমোডাস’ নাটক সাফল্যের সঙ্গে অভিনীত হল সম্প্রতি।
শোভাবাজার প্রতিবিম্ব-র সঙ্গে যাদের পরিচয় রয়েছে, তারা জানেন, নানা ধরণ নানা ভাবনার একের পর এক থিয়েটার দর্শককে উপহার দিয়ে চলছে এই সংস্থা। শচীন ভট্টাচার্যের ‘ভাতচুরি’ ও ‘মুশকিল আসান’, সাগর দেবনাথ ও চঞ্চল ভট্টাচার্যের মৃগয়া, মনোজ মিত্রের ‘পুঁটি রামায়ণ’ ও ‘অপারেশন ভোমরাগড়’, শ্যামাকান্ত দাশের ‘ঝিন্দের বন্দী’, রতন কুমার ঘোষের ‘গণদেবতা’ (তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে) ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য নাটক দর্শকদের নিয়মিত উপহার দিয়ে চলেছে শোভাবাজার প্রতিবিম্ব। তাই শোভাবাজার প্রতিবিম্ব বাংলা নাট্যজগতে একটি বিশিষ্ট নাট্যসংস্থা হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছে।
বর্তমানে বিভিন্ন নাট্যদলে দেখা যাচ্ছে তথাকথিত কিছু নামী-দামী শিল্পী নিয়ে নির্দেশকরা উৎরে যাচ্ছেন। চার্ণককে ধন্যবাদ, তিনি সেপথে না হেঁটে, একটি রেপার্টরি থিয়েটার বানাবার চেষ্টা করছেন ওয়ার্কশপের মাধ্যমে। চার্ণক বুঝতে পেরেছেন এই পথে না গেলে থিয়েটারে একদিন চরম সংকট ঘনিয়ে আসবে। প্রমাণস্বরূপ আমরা দেখতে পাচ্ছি বাণিজ্যিক থিয়েটার প্রায় অবলুপ্তির পথে।
‘কমোডাস’ টিমওয়ার্কের নাটক। টিমওয়ার্ক এককথায় প্রশংসনীয়। কমোডাসের ভূমিকায় চার্ণক দর্শকদের মন জয় করেছেন। সৃষ্টি করেছেন বেশ কিছু নাট্য মুহূর্ত। অন্যান্য পার্শ্বচরিত্র যেমন স্বপ্নদীপ চক্রবর্তী (ক্লিয়েন্ডার), সৌমী ঘোষ (লুসিলিয়া),সৌমিতা বোস (মারসিয়া) ও অমিত রায় (কুইনটিনাস) বেশ নজর কাড়লেও বাকিদের প্রয়োগ নিয়ে চার্ণককে ভাবতেই হবে।
কমোডাস নাটকে মঞ্চ নির্মাণে বিলু দত্ত মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। আবহ ও আলো এই নাটকটিকে একটি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে, যার জন্য অবশ্যই ধন্যবাদ পাবেন যথাক্রমে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌমেন চক্রবর্তী। আবহ প্রক্ষেপণে যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন সন্দীপ খাঁ। রিয়া মিত্রের কোরিওগ্রাফি চোখে পড়ার মতো।
কমোডাস নাটকের শেষে একটি সুন্দর সম্মাননা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। নাট্যজগতের দীর্ঘদিনের কর্মী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে প্রথম বছরের ‘শচীন ভট্টাচার্য স্মারক সম্মান ২০২৩’ তুলে দেন বিশিষ্ট কবি নাট্যকার চঞ্চল ভট্টাচার্য। শচীন ভট্টাচার্যকে নিয়ে স্বরচিত কবিতার আবৃত্তি করেন বইমেলার পরিচিত মানুষ আজকের দাদাঠাকুর কবি-আবৃত্তিকার অলোক দত্ত। সকলের সংক্ষিপ্ত নাট্যকর্মের বিবরণ দিয়ে শেষপর্যায়ের অনুষ্ঠানটি সংক্ষেপে সঞ্চালনা করেন অনির্বাণের অভিনেতা ও সম্পাদক, সুকল্পের নির্দেশক শঙ্খ ভট্টাচার্য।