তিনদিন ধরে অনুষ্ঠিত হলো মনীষা ও ইমন মাইমের নাট্য উৎসব ২০২৪

Spread the love



-ইন্দ্রজিৎ আইচ

সম্প্রতি মছলন্দপুরের রাজবল্লভপুর হাইস্কুল মাঠে তিনদিন ধরে অনুষ্ঠিত হল মছলন্দপুর মনীষা ও ইমন মাইম সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, অনুষ্ঠান এবং নাট্য উৎসব। আর্থিক সহায়তায় ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক। এবছর ছিল এই উৎসবের ১৬ তম বর্ষ। প্রথম দিন সকাল সাড়ে ছটায় রোড রেসের মাধ্যমে এই উৎসবের শুভ সূচনা হয়। প্রায় ১০০ জন প্রতিযোগী এই রোড রেসে অংশগ্রহণ করেন। এদিন সকাল থেকে ছিল অংকন ও নৃত্য প্রতিযোগিতা। বিকেলে ছিল “ইউরোপের প্রেক্ষাপটে ভারতের নবজাগরণ” বিষয়ক আলোচনা। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় মনীষার ছোট বন্ধুদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আবৃত্তি, নৃত্য, সংগীত ও শ্রুতিনাটক দিয়ে সাজানো ছিল মনীষার এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এদিনের সন্ধ্যার সর্বশেষ আকর্ষণ ছিল দত্তপুকুর দৃষ্টি নাট্য সংস্থার প্রযোজনা “জাতা বুড়ির কুয়ো”। নাট্যব্যক্তিত্ব বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-র তক্তাবধানে ভাস্কর মুখার্জীর নির্দেশনায় মুন্সী প্রেমচাঁদ এর গল্প থেকে তৈরি এই নাটক সকল দর্শকের মন কাড়ে। উৎসবের দ্বিতীয় দিন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনের সকালে পদযাত্রা করে নেতাজি মূর্তি পাদদেশে এসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং নেতাজীর প্রতি সম্মান জ্ঞাপন এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। তারপর একে একে আবৃত্তি, সংগীত ও প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় মনীষার বন্ধুদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সমবেত সংগীত ও শ্রুতিনাটক দিয়ে সাজানো ছিল এই অনুষ্ঠান। এরপর ছিল ইমনের বন্ধুদের নৃত্যানুষ্ঠান। এদিনের শেষ অনুষ্ঠান ছিল জীবন অধিকারী নির্দেশিত ইমনের নাটক “যুযুধান” । এই নাটকের মূল বক্তব্য এবং অনুপ মল্লিক, জীবন অধিকারী ও জয়ন্ত সাহার অভিনয় সকল দর্শকের মন জয় করে। উৎসবের শেষ দিন ছিল বিতর্ক প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যায় ছিল এই তিন দিন ধরে অনুষ্ঠিত সমস্ত প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। এরপর মঞ্চস্থ হয় ব্রেক থ্রু সায়েন্স সোসাইটির অনুষ্ঠান “মন্ত্রে নয় বিজ্ঞানেই জ্বলে আগুন”। এরপর মঞ্চস্থ হয় ধীরাজ হাওলাদার-এর নির্দেশনায় ইমনের বন্ধুদের মূকাভিনয়। এবছরের এই উৎসবের শেষ অনুষ্ঠান ছিল মছলন্দপুর ইমন মাইম সেন্টার এর l নবতম প্রযোজনা ইমনের শিশু-কিশোর বিভাগের “হিংসুটে দৈত্য”। যার পরিচালনায় ছিলেন সৃজা হাওলাদার। অস্কার ওয়াইল্ড এর চির নতুন গল্পটিকে কেন্দ্র করে ইমনের ৪০জন ছোট্ট বন্ধুদের রঙিন ও ঝলমলে এই প্রযোজনা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক ভাললাগার সঞ্চার করে। জয়ন্ত সাহার আলো, সায়ন প্রামাণিকের দৈত্য চরিত্রে অভিনয় এবং বিশেষ করে সমস্ত ছোট্ট বন্ধুদের নৃত্য,অভিনয় ও সহাস্য অংশগ্রহণ প্রযোজনাটিকে আলাদা মাত্রা দান করেছে। সবকিছু মিলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন-কে কেন্দ্র করে তিন দিনের এই যৌথ উৎসব প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনায় যথেষ্ট সাফল্যতার সাথে সম্পন্ন হল। ইমন মাইম সেন্টারের কর্ণধার ধীরাজ হাওলাদার জানান- “ছোটদের চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য এবং একটি সুস্থ সংস্কৃতিক পরিমণ্ডল বজায় রাখার উদ্দেশ্যে সকলের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানটির উত্তরোত্তর আরো শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে এই আশা রাখি।”

Author