“দর্পন” সকলের অনবদ্য অভিনয় চোখে পড়ার মতন
–ইন্দ্রজিৎ আইচ
সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার মুক্তাঙ্গন নাট্টালয়ে মঞ্চস্থ হলো মিউনাস নাট্যদলের নতুন নাটক “দর্পন “। নাটক মোহিত চট্টোপাধ্যায়। এই নাটকের ভাবনা তার গল্প কাহিনী একেবারে মৌলিক ভাবে সজ্জিত হয়েছে। কলকাতায় দুটি ছেলে দুলাল আর নরেন নিবারণবাবুর
বাড়িতে ভাড়া থাকেন। দুজনেই চাকরি করে আর দুজনেই অবিবাহিত। একদিন হঠাৎ এক অপরিচিত মহিলা রাতে দুলালের ঘরে ঢুকে পড়ে। সে জানায় কেউ তাকে একজন তাড়া করেছে। ভয় পেয়ে ঢুকে পড়েছে ও সেই সাথে দুটি ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিয়েছে। সেই মহিলা দুলাল কে বলে আজ এই রাতে এখানে থাকবে ও ভোরবেলা চলে যাবে। দুলাল অনেক ভেবে রাজি হয়। দুলাল সারা রাত জেগে কাটায় আর অজানা উৎকণ্ঠায় রাত কাটে। পাছে জানাজানি হয় এক অপরিচিত মহিলা তার ঘরে রয়েছে। এ যদি তার পাটনার নরেন আর বাড়িওলা নিবারণ জানতে পারে তাহলে কি হবে।
আর তো রক্ষা নেই। কিন্তু পরের দিন সেই মহিলা(স্বর্ন) চলে যায়। যাবার সময় বলে যায় নেহাত নিরুপায় হয়ে সে তার ঘরে আশ্রয় নিয়েছিল। কোনো ক্ষতি করার জন্যে নয়। কিন্তু সে চলে যাবার পর দুলাল দেখে তার ঘরে রাখা দশ হাজার টাকা আর নেই। দুলাল ভাবে ওই মহিলা তার টাকা চুরি করেছে। কিন্তু অনেক খুজে টাকাটা পায় বালিসের তলা থেকে। বিশ্বাস ফিরে আসে সেই অজানা আগন্তুক মহিলার প্রতি। এমন সময় কলিংবেল বেজে ওঠে। দুলাল দরজা খুলতেই ঘটনা ক্রমে এর আর এক পাটনার নরেন সেই মহিলা কে কোলে করে নিয়ে এসে বিছানায় শুইয়ে দেয়। সেই মহিলা তখন পুরোপুরি বেহুস হয়ে পড়েছে। চমকে ওঠে দুলাল। ভাবে একটু আগে তাকে চোর ভাবছিলো। অসুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে তার দাড়ানোর কথা। দুলাল দর্পণের মুখোমুখি দাড়ায়। এর পর কি হবে তাই নিয়েই এই নাটকের ক্লাইম্যাক্স। এক কথায় দারুন নাটক “দর্পন”। আমি এই নাটকের শেষ অংশ আর লিখলাম না কারণ যারা নাটক টা দেখবেন তারা আর মজা পাবেন না শেষ অংশ টা বলে দিলে। উৎসব দাসের সামগ্রিক পরিকল্পনায় ও সৌগত কর্মকার ও উৎস দাস এর নির্দেশনায় এক চমৎকার নাটক “দর্পন”। এই নাটকে বাবলু সরকার এর আলো, সোমনাথ পালের মঞ্চ ভাবনা এক কথায় অভিনব। মাকড়সার জালের মতন একটি দড়ি কে পাক দিয়ে টেনে সুন্দর মঞ্চ সজ্জা বানিয়েছেন সোমনাথ। এই নাটকে ভালো অভিনয় করেছেন(দুলাল)স্বর্নেন্দু দে সরকার, (নিবারণ)সোমনাথ পাল, (স্বর্ন)পিঙ্কি বসু, (নরেন) অভিজিৎ মন্ডল।সবার দেখার মতন প্রযোজনা দর্পন।