প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ‘অঙ্গন বেলঘরিয়া’ র নতুন নাটক ‘মৌন বাঁশরী’ দর্শকদের মনে দারুন সারা জাগাবে
–ইন্দ্রজিৎ আইচ
২৬ শে আগস্ট অঙ্গন বেলঘরিয়া বাংলা থিয়েটারের আঙিনায় ৩৭ বছরে পদার্পণ করলো। ঐ দিন তারা বরানগর রবীন্দ্রভবন মঞ্চে মঞ্চস্থ করলো তাদের এ বছরের নতুন নাটক ‘মৌন বাঁশরী’। অঙ্গন এ পর্যন্ত যত নাটক প্রযোজনা করেছে আমার মতে এই নাটকটি সেই গুলির থেকে একটি ব্যাতিক্রমী প্রোযজনা এবং নাটকটি দর্শকদের মনে মণিকঠায় দীর্ঘদিন জাগরুক থাকবে।
নাটকটি একটি গ্রিক পৌরাণিক কাহিনীকে আশ্রয় করে উঠেছে। এটি একটি ভালোবাসার নাটক। দুজন নরনারীর শাশ্বত প্রেমকে ঘিরে গড়ে উঠেছে এই নাটক কিন্ত নাট্যকার সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় নাটকটিকে দুটি ভিন্ন সম্পদায়ের নরনারীর প্রেম এবং বিবাহকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা জাতপাত, গোষ্ঠীদ্বন্দ এবং সর্বশেষ পরিনতি মৃত্যু এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সবটাই খুব সুন্দরভাবে তার নাটকে নিয়ে এসেছে। অভি সেনগুপ্ত তার দীর্ঘদিনের নাটক পরিচালনার অভিজ্ঞতা দিয়ে নাটকটিকে দর্শকদের কাছে আকর্ষনীয় করে তুলেছে। বিশেষ করে নাটকের বিভিন্ন দৃশ্য কোরাসের মাধ্যমে দৃশ্যগুলিকে মনগ্রাহী করে তুলেছে।
মানবপ্রেমী সঙ্গীতশিল্পী, দেবতাপুত্র অর্ফিউস ভালোবেসে বিবাহ করে মেষপালক গোষ্ঠীর একটি সাধারণ মেয়ে ইউরিদিসকে।
কিন্ত দীর্ঘদিন ধরে মেষপালকদের নেতা আরিস্তেউস ইউরিদিসকে প্রেম নিবেদন করা সত্বেও সাড়া না পেয়ে সে গোষ্ঠীঅধিপতী ভ্যাসিলিউসের সাহায্যে ইউরিদিসকে হত্যা করে।
সমিত দাস, শুভাশিস দত্ত, সঞ্জয় মুখার্জি, সুব্রত সরকার, মৌসুমী পাল তাদের মাধ্যমে চরিত্রগুলিকে দর্শকদের কাছে জীবন্ত করে তুলেছেন। অন্যান্য অভিনেতা অভিনেত্রিরাও চরিত্রাঅনুযায়ী যথাযথ।
সৌমেন চক্রবর্তীর আলোক ভাবনা, তপন বিশ্বাসের আবহ ভাবনা, দেবব্রত মাইতির মঞ্চ, সমিত দাসের ও সুরোজিৎ এর গানের সুর নাটকটিকে এক অন্যমাত্রায় প্রতিষ্ঠিত করেছে যা বাংলা থিয়েটারে একটি কালজয়ী ব্যাতিক্রমী প্রোযোজনা হিসেবে দীর্ঘদিন দর্শকদের মনে থেকে যাবে।