সফল ভাবে অনুষ্ঠিত হলো গোবরডাঙ্গা নাবিক নাট্যম এর নাট্যমিলন উৎসব ২০২৩
–ইন্দ্রজিৎ আইচ
মহাসাড়ম্বরে উদযাপিত হল গোবরডাঙ্গা নাবিক নাট্যমের নাট্যমিলন উৎসব।গত ৩রা মার্চ থেকে ৫ই মার্চ ২০২৩ গোবরডাঙ্গার সংস্কৃতি কেন্দ্রে অর্থাৎ বিচিত্রাতে বিভিন্ন স্বাদের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হলো এই নাট্যমিলন উৎসব । উৎসবের সূচনাতে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত নাটক একাডেমীর হৈমন্তী চট্টোপাধ্যায় এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ পশ্চিমবঙ্গ নাট্য একাডেমীর সদস্য আশিস চট্টোপাধ্যায় , নাট্যনির্দেশক আশিস দাস, গোবরডাঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিলর সুভাষ দত্ত এবং বাসুদেব কুন্ডু , নাট্য গবেষক অভিক ভট্টাচার্য সহ প্রমূখ বিশিষ্টজনেরা, উপস্থিত ছিলেন কলকাতা আকাশবাণীর নাট্য বিভাগের রফিউদ্দিন বাবু। নাবিক নাট্যম এর পক্ষ থেকে সকল গুণীজনদের সম্মান জ্ঞাপন করা হয় এবং তাদের সংক্ষিপ্ত ভাষণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি মনোরম হয়ে ওঠে । সদ্যপ্রয়াত সাংবাদিক রাসমোহন দত্তের ছবিতে মাল্যদান এবং পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে উদ্বোধনী পর্বের সমাপ্তি ঘটে। এই দিন প্রথম নাটক পরিবেশন করেন গোবরডাঙ্গা নাবিক নাট্যমের শিশু কিশোর বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা “তিনুর কিসসা”। মাত্র ৩০ মিনিটের এই নাটকটি দেখে মনে হল আগামী প্রজন্ম খুব শক্ত হাতে বাংলা থিয়েটারের হাল ধরবে। এরপর অঙ্গন বেলঘড়িয়া ” স্বাধীনতা কাকে বলে”নাটকটি পরিবেশন করেন। এই দিনের শেষ নাটক “লাঠি”। পরিবেশন করেন গোবরডাঙ্গা নাবিক নাট্যম। মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি এবং জীবন অধিকারীর সুনিপুণ নির্দেশনায় দর্শক শ্রোতার মন ভরে যায়। হলভর্তি দর্শকের উষ্ণ অভিনন্দনে এবং আন্তরিক ভালবাসায় প্রথম দিনের অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে নাবিক নাট্যম পরিবেশন করেন একটি কোলাজ। ভারতবর্ষের স্বাধীনতার ৭৫ বছরকে স্মরণীয় করে রাখতে উদযাপন করেন আজাদি কা অমৃত মহোৎসব। নাচ গান গল্প কবিতা দিয়ে 12 জন কুশীলব নিয়ে অবিন দত্ত এবং রাখি বিশ্বাসের নির্দেশনায় এই অনুষ্ঠানটি উচ্চ প্রশংসিত হয়। এরপর বিভব নাট্য একাডেমি পরিবেশন করেন তাদের নাটক “স্বপ্ন স্বদেশ”। এই দিনের শেষ নাটক ” স্পর্শ “। পরিবেশন করেন ইছাপুর আলেয়া । এই দিনেও হল ভর্তি দর্শক বাংলা থিয়েটারের শেকড়কে আরো মজবুত করেছে বলে মনে হল। এই উৎসবের শেষ দিনে প্রথমেই ছিল একটি মনোজ্ঞ সেমিনার, যার বিষয় ছিল “থিয়েটার ইন এডুকেশন সিস্টেম “।এই সেমিনারে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন সঞ্জয় গাঙ্গুলী, অভিক ভট্টাচার্য এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।সেমিনারটির সঞ্চালনার দায়িত্ব ছিলেন নীলাদ্রি শেখর কাঞ্জিলাল। এই দিনে প্রথম নাটক ছিল “দুই পাখির ইচ্ছেপূরণ”।
পরিবেশনায় নট এ স্টোরিটেলার দ্বিতীয় নাটক পরিবেশন করেন দত্তপুকুর দৃষ্টির নাটক “জোনাকিরা ” ।তারপর গোবরডাঙ্গা নাবিক নাট্যম পরিবেশন করেন মনোজ মিত্রের বিখ্যাত নাটক ” পাখি “।জীবন অধিকারির নির্দেশনায় নাটকটির অভিনব প্রয়োগ দর্শক শ্রোতাগণকে মুগ্ধ করেছে। এই দিন মসলন্দপুর ইমন মাইম সেন্টার পরিবেশন করেন নৃত্যনাট্য “আলিবাবা “।সমগ্র অনুষ্ঠানগুলো দর্শকদের মনোগ্রাহী হয় । নাবিক নাট্যমের সমস্ত কুশীলবদের অক্লান্ত পরিশ্রম নাট্যমিলন উৎসবকে সফলতার শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।